ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা, অপরদিকে শ্রীনগরে জেলেদের আগাম প্রস্তুতি!

0
99

আরিফুল ইসলাম শ্যামল: একদিকে মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে সব ধরণের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। অপরদিকে নদীতে মা ইলিশ নিধনে শ্রীনগরে জেলেরা নিচ্ছে আগাম সব প্রস্তুতি! এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে সব ধরণের মাছ ধরার ট্রলার/নৌকা নামতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এনিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। অপরদিকে অসাধু জেলেরা নদীতে ইলিশ ধরতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ও বাঘড়া এলাকার জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রস্তুতি হিসেবে তৈরী করছেন নতুন ট্রলার/নৌকা ও সেরে নিচ্ছেন নৌকা মেরামতে কাজ। এছাড়া ইলিশের জাল সংগ্রহ ও সেলাইয়ের কাজ। জেলার এলাকায় অগ্রিম টাকা (দাদান) দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এখানে মা ইলিশ নিধনকে সামনে রেখে মহাউৎসব চলছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি জেলে সমিতি শ্রীনগর উপজেলা শাখায় তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ৩২০ জন। এর বাহিরেও এখানে রয়েছে প্রায় দ্বিগুন জেলে। অপরদিকে শ্রীনগরে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ে মোট জনবল ৩ জন।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, মা ইলিশ নিধনের লক্ষ্যে ভাগ্যকুল ও বাঘড়া ঐলাকা থেকে প্রায় ৫’শতাধিক নৌকা নামবে পদ্ম নদীতে। প্রতিটি ট্রলারে জনবলের প্রয়োজন কমপক্ষে ৫/১০ জন। ইলিশের ট্রলারে লাগানো হয় শক্তিশালী শ্যালো ইঞ্জিন। কারণ হিসেবে জানা যায়, অভিযানের সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর সি’বোট’র সাথে পাল্লা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অসাধু জেলেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পদ্মা নদীর তীর ঘেষা উপজেলঅর ভাগ্যকুল বাজার ও এর আশপাশে খালে শতশত ইলিশের নৌকা ভাসমান রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নতুন নৌকা তৈরী ও জাল সেলাই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। এছাড়াও অনেক নৌকা মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে বাঘড়া এলাকায় জেলেরা তরিঘড়ি করে বিভিন্ন কাজকর্ম সারছেন।

এ সময় নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত কয়েকজন জেলের কাছে জানতে চাইলে রহস্যজনক কারণে তারা মুখ খুলতে রাজি হননি! তবে বাঘড়া এলাকায় একজন নৌকার মিস্ত্রী বলেন, একটি নৌকা/ট্রলার তৈরীতে খরচ পরে প্রায় ২ লাখ টাকা ৩২ ঘোড়ার শ্যালো ইঞ্জিনসহ। তিনি যে ট্রলারটি নির্মাণ করছেন তার মালিক ওই এলাকার সোহেল নামে এক ব্যক্তি।

এব্যাপরে উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবি জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ বর্মন বলেন, হিসেব অনুযায়ী গত বছর উপজেলায় মাছ ধরার নৌকার পরিমান ছিল প্রায় ৪’শতাধিক। এবছর বেড়ে তা ৫’শতাধিক ছাড়াবে। মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আশা করছি তালিকাভুক্ত কোনও জেলের নৌকা নদীতে অবৈধভাবে নামবেনা। তার পরেও অনেকে আইন অমান্য করে নদীতে নেমে পরে। সমিতির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন ইলিশ না ধরার জন্য সবাইকে সতর্ক করছি। তার পরেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যদি কেউ নদীতে মা ইলিশ ধরতে নামে তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনের জন্য নদীতে নামা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে সার্বক্ষনিক নজরদারি করা হবে।