চা বিক্রির টাকায় ছেলেকে বিসিএস ক্যাডার বানালেন বাবা

0
188

মো. ফরহাদ হোসাইন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়নের শামসুল হক। পেশায় একজন চা বিক্রেতা। উপজেলার শাইল্যার মোড় এলাকার ছোট চায়ের দোকান থেকে উপার্জিত টাকা দিয়েই চালান পরিবারের খরচ। পাশাপাশি সেই সামান্য টাকা দিয়েই চালাতেন মেঝো ছেলে মারুফের পড়াশুনা। এমন অবস্থায় কষ্টে পার করেছেন বছরের পর বছর।

তবে এবার সেই কষ্ট সার্থক হয়েছে শামসুল হকের। গত ৩ আগস্ট সদ্য ঘোষিত ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছন শামসুল হকের ছেলে মারুফ হোসেন। এতে খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠেছেন তিনি। ছেলের এমন সাফল্য অশ্রু এনেছে শামসুল হকের চোখে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে মাস্টার রোলে চাকুরি করতেন সামসুল হক। ২০১১ সালে এক্সিডেন্টে পা ভেঙে গেলে চাকুরিচ্যুত হন তিনি। সে সময় বড় ছেলে ও মেঝো ছেলের পড়াশুনা চালানোর তাগিদে ছোট চায়ের দোকান চালু করেন তিনি।

এরপর থেকে সেই দোকানের উপার্জিত টাকা দিয়েই মারুফের পড়াশুনা চালাতেন শামসুল হক। এইচ এস সি তে জিপিএ-৫ পেয়ে ২০১৪ সালে মারুফের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সুযোগ হয়। পরে চা বিক্রির জমানো টাকা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেখানে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেকে ভর্তি করেছিলেন তিনি।

এবিষয়ে বাবা শামসুল হক বলেন, ‘ছেলেটার ছোট থেকে পড়াশুনার প্রতি খুব মনোযোগ ছিল। আমার চাকরি যাওয়ার পর ওরে ইন্টারমেডিয়েটে ভর্তি করতে খুব কষ্ট হয়েছে। স্থানীয় এক সাংবাদিক সাহায্য করেছিল ওই সময়। তার পর তো ছেলেটা ঢাকা গেলো। এখন নাকি বড় চাকরি পাইবে৷ আল্লাহ আমার দুঃখটা সার্থক করেছে।’

শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মারুফ হোসেন বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে বাবা পড়াশুনা করিয়েছেন৷ আমার রেজাল্টে আমি কিছু স্কোলারশিপ পেয়েছি। তাতে বাবার কিছুটা সাহায্য হয়েছে। আমার মনে আছে ইন্টারমেডিয়েটে ভর্তির কিছুদিন আগে বাবার চাকুরী চলে যায়৷ তার পর অনেক কষ্ট করে আমাদের সংসার টা বাবা চালিয়েছে। আজ ৪১তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি৷ দোয়া করবেন যেন ভালো কোন স্থানে চাকুরির সুযোগ হয়। বাবা মায়ের দায়িত্ব নিয়ে যেন তাদের কষ্টের অবশান ঘটাতে পারি।’