বেনাপোল চেকপোষ্টে পাসপোর্টযাত্রীদের হয়রানি

0
132

নাজিম উদ্দীন জনি,শার্শা(বেনাপোল)প্রতিনিধিঃ ভারত থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীরা বেনাপোল চেকপোস্টে বিজিবি কর্তৃক হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। ভারত থেকে আনীত ব্যবহারের মালামাল রেখে দেওয়ার ও আটক করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের থাকলেও এবার নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে তাদের পাসপোর্ট রেখে দেওয়া। এমনটি অভিযোগ করেছেন ভারত থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশী পাসপোর্টযাত্রী রোজিনা খাতুন।

যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার গাজিপুর গ্রামের রানা শেখ এর স্ত্রী রোজিনা খাতুন বলেন, সে শবিনার (২০ আগষ্ট) সকাল ৮টার সময় ভারতে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ির জন্য কিছু জিনিসপত্র কিনে দেশে ফিরে আসি। বেনাপোল ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে বেনাপোল চেকপোস্টের তল্লাশি কেন্দ্রে এলে তার আনিত পণ্য সামগ্রী ও পাসপোর্ট নিয়ে নেয় বিজিবি সদস্যরা। এরপর অনেক অনুনয় বিনয় এর পর তার আনিত কিছু পণ্য রেখে বাকী পণ্য ফেরত দিলেও পাসপোর্ট ফেরত দেয়নি। সকাল থেকে পাসপোর্ট এর আসায় বসে থাকলেও বিজিবি ফেরত দেয়নি তার পাসপোর্ট। রোজিনা খাতুন বলেন, চেকপোস্টের বিজিবি সদস্য সফিকুল তার সাথে এই মহিলা আমাকে চেনো, আমার নাম শুনে অনেকে ভারত ঢোকে না। এসব কথা বলে বকাঝকা করে।

রোজিনা খাতুনের পাসপোর্ট রেখে দেওয়ার বিষয়টি শুনে বেনাপোল চেকপোস্ট ক্যাম্প কমান্ডার ঘটনাস্থলে আসলে বিজিবি সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, আমরা তাকে পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছি। এ নিয়ে বিজিবি ও রোজিনা উভয়ে ওই চেকপোষ্টে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুবেদার নজরুল ইসলাম সিসি ক্যামেরা দেখে পাসপোর্ট কোথায় আছে দেখার আশ্বাস দেন।

ঘটনাস্থলে বিজিবি সদস্য ফারুক হোসেন বার বার পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়ার কথা বললেও তার কথার জের ধরে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বলেন, গতকালও (শুক্রবার) এরকম ঘটনা ঘটেছে। তখন বিজিবির ওই সদস্য বলেন, আমরা পরে ওই যাত্রীকে ফোন করে পাসপোর্টটি ফেরত দিয়েছি।

এ রকম আরো ঘটনার অভিযোগ করেছেন, ঢাকার পাসপোার্টযাত্রী আলমগীর হোসেন, জুবাইদা বেগম, রোকেয়া খাতুন। তারা বলেন, ভারত থেকে ফেরার সময় একাধিকবার হয়রানির শিকার হতে হয় বিজিবির চেকপোষ্টে। প্রথমে বাংলাদেশের প্রধান ফটকে ঢোকার পর বিজিবি সেখানে ব্যাগ স্কানিংসহ হাতিয়ে তল্লাশি করে। আবার কাস্টমস এর আনুষ্ঠানিকতা শেষে বের হলে বেনাপোল চেকপোষ্ট আন্তর্জাতিক টার্মিনালের সামনে ব্যাগ হাতিয়ে কখনো ক্যাম্পে পাঠিয়ে তল্লাশি করে। আবার সেখান থেকে বের হয়ে বাসে উঠলে আমড়াখালী নামক স্থানে তল্লাশি করে। এ ভাবে বার বার ব্যাগ খুললে তারা নাজেহাল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ করে। বৈধ পাসপোর্ট ও সরকারের ভ্রমণকর দিয়ে ভারত যাওয়াই আমাদের অপরাধ বলেন ওই পাসপোর্টযাত্রীরা।

স্থানীয় সংবাদকর্মী রাসেল বলেন, কয়েকদিন আগে ভারত থেকে ফেরার সময় বিজিবি সদস্যরা আমার সাথে থাকা ব্যাগগুলো তন্নতন্ন করে তল্লাশি করে। এতে আমার হাতও কেটে যায়। পরিচয় ও রক্ত দেখেও বিজিবি সদস্যদের মন গলেনি। এ ভাবে প্রতিনিয়ত ৫০ গজের মধ্যে বিজিবি সদস্যরা একই যাত্রীর ব্যাগ দুই বার তল্লাশি করে। তারপরও মাঝে মধ্যে চেকপোস্ট ক্যাম্পে নিয়েও তল্লাশি করে থাকে বলে জানান ওই সংবাদহর্মী রাসেল হোসেন।

চেকপোস্ট ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার নজরুল ইসলাম বলেন, সিসি ক্যামেরা দেখে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।