এলিফ্যান্ট রোডে পুলিশ কর্তৃক ডাক্তার উত্যক্ত ও হেনস্থার ঘটনায় বিএমএ’র উদ্বেগ

0
130

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এক বিবৃতিতে রোববার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ডাক্তার বনাম পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বাক-বিতণ্ডা এবং ডাক্তারকে হেনস্থা করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আজ সোমবার বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়, চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মস্থলে যাতায়াতকালে বিভিন্ন জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক হয়রানি ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। এতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আতংকগ্রস্থ ও হতাশ হয়ে পড়ছেন। এমন অবস্থায় তারা কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন এবং যার প্রভাব বর্তমান নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পড়তে বাধ্য। বিএমএ নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে রোববারের ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বিএমএ নেতৃবৃন্দ বলেন, অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ চলমান লকডাউনকালীন সময়ে করোনা মোকাবেলায় সম্মুখসারির যোদ্ধা চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীগণ কর্মস্থলে যাতায়াতকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইন-শ্খৃলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হয়রানি ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ আতংকগ্রস্থ ও হতাশ হয়ে পড়ছেন।

গতকাল (১৮/০৪/২০২১) রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাইদা শওকত জেনির গাড়ি আটকিয়ে পরিচয় জানতে চাওয়ার নামে একজন নারী চিকিৎসককে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে তার খবর ও আংশিক ভিডিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নিজ গাড়িতে কর্মরত চিকিৎসক প্রতিষ্ঠানের স্টিকার লাগানো এবং নিজের নামাঙ্কিত চিকিৎসক গাউন পরিহিত অবস্থায় নিজের পরিচয় দেয়ার পরও তাকে আক্রমণাত্মকভাবে জেরা করে উত্যক্ত ও হেনস্থা করার খবর দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।

চিকিৎসকের এতোগুলো পরিচয় দেয়ার পরও কেবলমাত্র মুভমেন্ট পাস ও প্রাতিষ্ঠানিক আইডি কার্ডের নামে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এহেন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। “সচিবালয়” কিংবা “পুলিশ” কিংবা “সাংবাদিক” লেখা স্টিকারযুক্ত কোনো গাড়ি কোথাও আটকানো হয়েছে বা থামানো হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত নজির নেই। অধিকন্তু বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ চিকিৎসকই প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সঙ্গে জড়িত। তারা সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন না, ফলে তাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক আইডি কার্ডও নেই।

ক্রমাগত এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কারণে বিষয়টি এসোসিয়েশনের সভাপতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মহোদয়কে অবহিত করার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করলে এবং রাস্তায় ক্রমাগত চিকিৎসক ও স্থাস্থ্যকর্মীদের হয়রানি ও নাজেহাল করতে থাকলে নানা ধরনের মানসিক চাপে বিপর্যস্ত চিকিৎসক ও স্থাস্থ্যকর্মীগণ তাদের কাজে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে এবং যার প্রভাব বর্তমান নাজুক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পড়তে বাধ্য।