পুলিশ চেকপোস্টে হয়রানি নিয়ে ডিএমপির বক্তব্য

0
88

‘যাতায়াতের সময় যারা আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে যেটি চলমান বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে যৌক্তিক একটি বিষয়।’

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। সম্প্রতি পুলিশ চেকপোস্টে সাংবাদিক ও ডাক্তারসহ বেশকিছু ব্যক্তিদের হয়রানি নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এ ঘটনার পর নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সম্প্রতি ডিএমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তুলে ধরা হয়েছে ওই বক্তব্য।

পাঠকদের জন্য তা হবহু তুলে ধরা হলো:

ওই পোষ্টে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের বিপরীতে ডিএমপির বক্তব্য করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ বিস্তার রোধ করতে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ প্রসঙ্গে গত ১২ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।’

‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতির কারণে ১৪এপ্রিল ভোর ৬টা হতে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে শুরু থেকেই সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে মাঠে রয়েছে পুলিশ।’

সংস্থাটি আরও জানায়, ‘করোনার বিস্তার রোধে একদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সম্মানিত নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করে চলেছেন পুলিশের সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবাসহ জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং অতি জরুরি প্রয়োজনে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া বিনা কারণে বা উপযুক্ত পাস ছাড়া কোনো ব্যক্তি যাতে রাস্তায় বের হতে না পারেন তা নিশ্চিতকল্পে ২৪ ঘণ্টা ডিএমপির সদস্যরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছেন।’

‘১৪ এবং ১৫ এপ্রিল সাধারণ মানুষের সহযোগিতা নিয়ে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের কাজ অনেকটা সফলতার সঙ্গেই সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। যদিও বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়া ব্যক্তি এবং বিভিন্ন পরিষেবায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা কষ্টকর কাজ। কেননা, কিছু কিছু ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে যেয়ে পুলিশকে সারাদিনই গলদঘর্ম হতে হয়েছে।’

‘কিছু মিডিয়ায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কিছু ব্যক্তি পুলিশের চেকপোস্টে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’ এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে বলে ওই পোষ্টে জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, ‘বর্ণিত ঘটনার একটিতে দেখা যায়, কাওরান বাজারে পুলিশ একটি প্রাইভেটকারের ড্রাইভারকে বাইরে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি গাড়িটি জনৈক চিকিৎসকের বলে বর্ণনা দেন। কিন্তু চিকিৎসক গাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। ড্রাইভার উক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ায় গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে বলা হয়। কিন্তু গাড়ির কাগজপত্রে বর্ণিত গাড়ির মালিকের সঙ্গে বর্ণিত চিকিৎসকের সামঞ্জস্য না থাকায় ড্রাইভারের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।’

ওই ফেসবুক পোষ্টে অপর আরেকটি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘অন্যদিকে, জাহাঙ্গীর গেট এলাকার এক ঘটনায় সম্মানিত একজন নাগরিক নিজ বাসা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বের হলে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণিসহ বেশ কয়েকটি চেকপোস্টের মুখোমুখি হন। এতে স্বভাবতই হাসপাতালে পৌঁছাতে তার দেরি হচ্ছিল। জাহাঙ্গীর গেট সংলগ্ন চেকপোস্টে তিনি ৩০ সেকেন্ডের মতো আটকে ছিলেন বলে জানান। যাতায়াতের সময় যারা আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদেরকেই যাচাই-বাছাই করা হয়েছে যেটি চলমান বিধিনিষেধের প্রেক্ষিতে যৌক্তিক একটি বিষয়।’

‘কোভিড মহামারির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধ মেনে চলা সকল নাগরিকের সমান দায়িত্ব।’ এ সমস্ত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ডিএমপি অঙ্গীকারবদ্ধ জানায় ডিএমপি।

কোনো পুলিশ সদস্য যাতে কোনও অপেশাদার আচরণ না করেন, সে জন্য সর্বদা তাদের আচার-আচরণ মনিটর করা হয়ে থাকে এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ চলমান আছে বলেও জানায় সংস্থাটি।

ডিএমপি আও জানায়, ‘পুলিশের কাজে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কোনো ব্যত্যয় দেখলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’