৬ ডিসেম্বর রাজারহাট হানাদার মুক্ত দিবস

0
94

সরকার অরুণ যদু, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ৬ ডিসেম্বর রাজারহাট হানাদার মুক্ত দিবস। রাজারহাটের ঠাটমারী বদ্ধভূমিতে ৭১এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় অগণিত মানুষকে নির্বাচারে হত্যা করা হয়েছিল ।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে , ১৯৭১ ইং সনে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর পাক বাহিনী রাজারহাট-কুড়িগ্রাম সড়কের পার্শ্বে ঠাটমারীতে ক্যাম্প গড়ে তোলেন। এখান থেকে রাজাকার ও তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে পরিকল্পনা মাফিক বিভিন্ন স্থানে সাধারন মানুষের ঘর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ , নরহত্যা , ধর্ষন , লুটপাট সহ নানা র্ববরোচিত কর্মকান্ড পরিচালনা করেন হানাদার-পাকবাহিনী।

যুদ্ধ চলাকালীন প্রায় দিন কোন না কোন স্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সাধারন মানুষদের ধরে এনে নানা ভাবে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করত। এভাবে কত মানুষকে হত্যা করে লাশ পার্শ্বের ব্রীজের নীচে পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে এর সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানেন না। তবে পানির ¯্রােতে অগনিত মানুষের লাশ ভেসে যেতে দেখেছেন এলাকাবাসী। মুক্তিযুদ্ধে ১১জন মুক্তিযোদ্ধাকে ওই স্থানে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসব শহীদের রেকর্ড রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সরকারী হিসেবে।

পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর নানা অপকর্মের স্বাক্ষী ঠাটমারী বদ্ধভূমি। মহান মুক্তিযুদ্ধে নানা বেদনা বিধুর ও স্মৃতি বিজড়িত ঘটনার সাথে জড়িয়েরয়েছে ঠাটমারী বদ্ধভূমি। শহীদদের সম্মানার্থে ২০০৬ইং সনে সরকারী অর্থায়নে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঠাটমারী বদ্ধভূমিতে গড়ে উঠে স্মৃতিস্তম্ভ। বিজয়ের মাস আসলে কথা আসে ঠাটমারী বদ্ধভূমির। এসব লোমহর্ষক ঘটনা যারা জানেন এখনো মনে তারা পড়লে শিহরে উঠেন ।

মুক্তিযেুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, ঠাটমারী থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে তৎকালীন আওয়ামীলীগের কুড়িগ্রাম মহকুমা সভাপতি আহম্মদ হোসেন সরকারের টগরাইহাট গ্রামের বাড়িতে অস্ত্র ও গোলা বারুদ মজুদ করা হয়। এরপর ওই বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন শেষে প্রথমে পুলিশ ,আনসার ও স্থানীয় যুবক-ছাত্রদের সমন্বয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। তারা সক্রিয় হয়ে উঠলে তাদের প্রতিরোধের মূখে শেষ অবধি হানাদার বাহিনী পিছু হঠতে শুরু করে।

রাজারহাট উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রজব আলী জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন শেষ পর্যায়ে বাংলার মুক্তিকামী দামাল ছেলেদের প্রতিরোধের মূখে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী রাজারহাট ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ইং সনে রাজারহাট হানাদার মুক্ত হয়। তাই প্রতি বছর হানাদার মুক্ত দিবসে রাজারহাট ঠাটমারী বদ্ধভূমি স্মৃতিস্তম্ভে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে নানা কর্মসূচী পালন করা হয়।