ভোটের মাঝেই বড় ধাক্কা দিল্লি কংগ্রেস প্রধানের পদত্যাগ

0
40

লোকসভা নির্বাচন চলছে ভারতে। ইতিমধ্যেই ছয় দফা ভোটের দ্বিতীয় দফাও শেষ হয়েছে। এরই মাঝে বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস। রোববার পদত্যাগ করেছেন দিল্লির কংগ্রেস প্রধান অরবিন্দর সিং লাভলি। তবে দল থেকে পদত্যাগ করেননি তিনি। দল না ছাড়লেও প্রদেশ সভাপতি পদে আর থাকতে চান না অরবিন্দর। নির্বাচনের মধ্যেই তার এই পদত্যাগ কংগ্রেসের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেসের দিল্লি শাখার সভাপতির পদ ছেড়েছেন অরবিন্দর সিং লাভলি। দিল্লিতে আম আদমি পার্টির (এএপি) সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বাঁধার কারণেই ক্ষোভে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। রোববার সকালে অরবিন্দর জানান, তিনি কংগ্রেসের দিল্লি শাখার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। কংগ্রেস প্রধান মলি­কার্জুন খার্গের কাছে তার পদত্যাগপত্রে অরবিন্দর বলেছেন, দিল্লি কংগ্রেস ইউনিটের সভাপতি হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম নন তিনি।

দিল্লির কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দীপক বাবারিয়া যেভাবে সবকিছু পরিচালনা করেন, তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা। অরবিন্দর দাবি, দীপক বাবারিয়ার বিরোধিতাকারীদের বহিষ্কারের জন্য তিনি প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ছিলেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোটের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিল দিল্লির কংগ্রেস ইউনিট। এর পরও দল সিদ্ধান্ত নেয় তাদের সঙ্গে জোট গঠনের। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, ‘দিল্লির কংগ্রেস ইউনিট এমন একটি দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিরুদ্ধে ছিল যা গঠিতই হয়েছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে এবং যাদের মন্ত্রিসভার অর্ধেক মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন।’ এছাড়া দলের প্রদেশ পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘এখন আমার কোনো কথাই গুরুত্ব পায় না। এমনকি দলের ব্লক সভাপতিদের নিয়োগেরও অনুমতি দেওয়া হয় না।’

দিল্লিতে জোটের অংশ হিসেবে কংগ্রেসকে লোকসভায় তিনটি আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব আসনে ‘অপরিচিতদের’ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন অরবিন্দর। উত্তর-পশ্চিম দিল্লিতে উদিত রাজ হলেন কংগ্রেস-এএপির যৌথ প্রার্থী। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন কানহাইয়া কুমার। অরবিন্দর বলেছেন, উদিত রাজ ও কানহাইয়া কুমারকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করায় দিল্লি কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তিনি আরও বলেছেন, পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও দীপক বাবারিয়া তাকে অসন্তুষ্ট নেতাদের বহিষ্কার করতে বলেন। এমনকি, তাদের সঙ্গে একাধিকবার উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও করেন। এ ছাড়া, উদিত রাজ ও কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে ‘অসম্মানজনক ও অবমাননাকর’ মন্তব্য করার অভিযোগও করেছেন তিনি। পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘যেহেতু আমি দলীয় কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছি না, তাই ওই পদে থাকার কোনো কারণ দেখছি না।’

উল্লেখ্য, অরবিন্দর সিং লাভলি দীর্ঘদিনের কংগ্রেস নেতা। দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের অধীনে একাধিকবার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মাঝখানে ২০১৭ সালের দিকে একবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কয়েক মাস পর ফিরে আসেন কংগ্রেসে। আম আদমি পার্টির প্রবল বিরোধী হিসাবে পরিচিত অরবিন্দর।