জাপা প্রার্থী চুন্নুর পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লেখা নিয়ে বিতর্ক

0
68

করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশারগঞ্জ-৩ আসনের রাস্তাঘাটে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর নির্বাচনী পোস্টার দেখা যাচ্ছে। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করছেন। পোস্টার এক জায়গায় লেখা রয়েছে, ‘জাতীয় পার্টির মনোনীত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংসদ সদস্য প্রার্থী’। ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লেখাটি নিয়ে বিপত্তি দেখা দিয়েছে আওয়ামী অঙ্গণে।
বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথা চলছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বেশ ক্ষুব্ধ হলেও দলটির সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এক পক্ষ বলছে, চুন্নু পোস্টারে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত লিখতে পারেন না।

অন্য পক্ষ বলছে, এ আসনে যেহেতু আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি, তাদের দলের প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে, তাই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া না হলেও সবাই জানে, জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজেই পোস্টারে যা লেখা হয়েছে, সেটা অসত্য নয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে প্রার্থী হন। পরে নির্বাচন নিয়ে জাতীয়ভাবে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়। এ কারণে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মুজিবুল হক চুন্নুর পোস্টার নিয়ে নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হওয়ায় এ আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাই বলে তাকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। তিনি পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত’ লিখে ঠিক করেননি।
এটা কোনোভাবে আমরা মানতে পারছি না।”

এ বিষয়ে তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক মোতাহার বলেছেন, ‘এ ধরণের পোস্টার আমাদের বিস্মিত করেছে। চুন্নুকে তো আমরা সমর্থন দেইনি। আমরা বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে কথা বলব।’

এদিকে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকলেও দলটির চারজন নেতাকর্মী আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তারা হলেন, নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজুল হক (ঈগল), মেজর (অব.) মো. নাসিমুল হক (কাঁচি), কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবীর ভূঁইয়া (কেটলি) এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. রুবেল মিয়া (ট্রাক)।

পোস্টার প্রসঙ্গে কথা বলতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জাপা প্রার্থী মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে কথা বলতে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে জেলা জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটি ফালতু বিতর্ক। কারণ সবাই জানে, আসনটিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে ঘোষণা না দিলেও সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত মানলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তো লাঙ্গলই ভোট দিতে হবে। আর কেউ যদি দলীয় সিদ্ধান্ত না মানেন, সেটা অন্য বিষয়।’