লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, অপহরণের ৩ দিন পর শিশুর লাশ উদ্ধার

0
284

চৌধুরী নুপুর নাহার তাজ,নিজস্ব প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামায় অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ৩ দিন পর ২য় শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্র আরিফুজ্জামান ইসলামের (৮) মাটির নিচে পুতে রাখা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটি খামারপাড়া ইউনিয়নের কায়েমপুর গ্রামের ডাক্তারপাড়ার আতিউর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় ১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার দিবাগত রাত ১ টার দিকে উপজেলার পাকেরহাট আরাজি গ্রামের বাবু মেম্বার পাড়ার জিকরুলের মিলের পার্শ্বে আঃ সালাম পুলিশের ভাড়াটিয়া বাড়ির আঙ্গিনা থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

শিশুটির পরিবার ও খানসামা থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল থেকে কায়েমপুর গ্রামের বাড়ির পার্শ্বে খেলার মাঠ থেকে নিখোঁজ হয় ৮ বছরের শিশু আরিফুজ্জামান। এরপর রাত প্রায় ৮ টার দিকে মুঠোফোনে শিশুর বাবা আতিউরকে তার ছেলেকে অপহরণের কথা বলে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঐ রাতেই শিশুর বাবা আতিউর থানায় একটি জিডি করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। এরপর মুঠোফোনের নাম্বার ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত সন্দেহে একই এলাকার আঃ মালেকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৩) আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশুটিকে অপহরণের পর পাকেরহাটে আঃ সালাম পুলিশের ভাড়া বাড়িতে শ্বাসরোধে মেরে ফেলে বস্তায় করে মাটিতে পুতে ফেলার কথা স্বীকার করে। এরপর সেই লাশ উদ্ধারের জন্য শরিফুলের দেয়া ঠিকানায় এসে থানা পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়দের সামনে লাশ উদ্ধার করে।

আটক শরিফুলের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ আরো জানান, ৩০ হাজার টাকায় মোবাইল আর ৭০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনায় লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে শিশুটিকে। পরে সেই মুক্তিপণ না পেলে শিশুটিকে পাকেরহাটে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে এসে প্রথমে বলাৎকার ও পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে মাটিতে পুতে রাখা হয়।

এ বিষয়ে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় জানান, ঘটনাটি জানার পর হতেই শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে সন্দেহজনক হিসেবে শরিফুলকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার দেয়া তথ্যানুযায়ী মাটির নিচে বস্তাবন্দি হিসেবে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি অপহরণ ও হত্যার মামলা করেন। সেই মামলায় আটক শরিফুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।