রাজধানীতে তিনটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

0
80

এস,এম,মনির হোসেন জীবন : রাজধানীর মোহাম্মদপুর-শ্যামলী এলাকায় উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার নামে প্রতারণা, বিভিন্ন হাসপাতালে অনিয়ম ও ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে একযোগে টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান শুরু করা হয়েছে।

এলক্ষে অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর তিনটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র‍্যাব-২ ও ডিজি হেলথ প্রতিনিধির সহযোগিতায় টাস্কফোর্স অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচেছ।

মোহাম্মদপুর এলাকায় নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালের পরিচালক বাবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ওয়ার্ড বয়কে দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন র‍্যাবের এই ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এছাড়া একই অপরাধে রাজধানীর শ্যামলী ২১/১৪ বাবর রোড ব্লক বি- মক্কা-মদিনা হাসপাতালের পরিচালক নূর নবীকে এক বছরের কারাদন্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদকে ৬ মাস করে সাজা প্রদান করেন। সেই সঙ্গে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই ঝটিকা অভিযান শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় শেষ হয়। অভিযানেকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও র‍্যাব-২ এর অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও এলিট ফোর্স র‍্যাব-২ এর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। এসময় তিনটি হাসপাতালের মালিক ও তিন কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া দু’টি হাসপাতালকে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু সাংবাদিকদেরকে জানান, রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুর থানার বাবর রোডে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে এসে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দেয় দালালচক্র। তারা রোগী আনার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া।

তিনি আরো বলেন, ক্রিসেন্ট হাসপাতালের অনুমোদনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে চার মাস আগে। পরিচালক হাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন (৫০)। তিনি এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। একাধারে তিনি হাসপাতালটির পরিচালক ও ডাক্তার। আবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও হাসপাতালটিকে সতর্ক করা হয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। তারা বেশিরভাগই অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল। তারাই বেশি এই সব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। আমরা চাই মানুষ এমন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসার নামে প্রতারিত না হন। এমন অপচিকিৎসা মানুষের অর্থ ও জীবনের জন্য খুবই বিপজ্জনক।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরো জানান, সিলগালা করা হয়েছে জনস্বার্থে। সিলগালা করে টোটাল রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আছেন তার মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রেরণ করা হবে। যাতে করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

র‌্যাব জানিয়েছেন, অভিযানে হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায়, মালিক কর্মচারীদের জেল-জরিমানা ও প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।সেখানে পরিচালক নূর নবীর কোনও ধরনের চিকিৎসা প্রদানের সনদ বা অনুমোদন নেই। তিনি তার রুমে বসে রোগী দেখছেন এবং তাদের ব্যবস্থা পত্র দিচ্ছেন।

মোহাম্মদপুর এলাকায় নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালের একটি চক্র সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনতেন। উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললেও অপরিষ্কার ফ্লোরে রক্ত মাখা কাপড় ও ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে অপারেশন করানো হতো। র‌্যাবের তিনি কোনওভাবেই দিতে পারেন না।

এই অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটির পরিচালক নূর নবীকে এক বছরের কারাদন্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদকে ৬ মাস করে সাজা প্রদান করেন। সেই সঙ্গে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।