মানিকগঞ্জে লোকজ শিল্প ও পণ্য মেলার শিশু পার্কে বিনোদনের নানা আয়োজন

0
235

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের আয়োজনে লোকজ ও শিল্প পণ্য মেলায় বিনোদনের বিভিন্ন রাইডসে শিশুদের উপসে পরা ভির লক্ষ করা গেছে। ট্রেন, স্পীড বোর্ড, নাগর দোলা, দৌল-নৌকা সহ বিভিন্ন রাইডসে শিশুদের হৈ হুল্লোড়ে মেলা অঙ্গন বিনোদনের প্রাণ কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে।

জেলা পুলিশের আয়োজনে মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালের (বিজয় মেলা) মাঠে গত ৩১ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হওয়া মাসব্যাপী “লোকজ ও শিল্প পণ্য মেলার” প্রবেশ টিকেটে থাকছে মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পুরস্কার।

বাবা মায়ের সাথে মেলায় আসা ৭বছরের লাবিব ট্রেনে উঠবো ট্রেনে উঠবো বলেই থমকে দাঁড়ালো, বাবা-মা দুজনই কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন ছেলের বায়নার কাছে। অবশেষে ছেলের চাওয়া পূরণ করতে হলো তাদের। ট্রেনে উঠেই আনন্দে লাফালাফি শিশুটির। এভাবে প্রতিদিনই মেলায় আসা শিশু-কিশোরদের বায়না পূরণ করতে হচ্ছে মা-বাবাদের। বাণিজ্য মেলায় বড়দের পাশাপাশি শিশুদের মন কাড়ার জন্য রয়েছে রাইড, ট্রেন, থ্রিডি, নাইন-ডি ও ভুতের বাড়ি, সার্কাস সহ বেশ কয়েকটি বিনোদন কেন্দ্র। চোখের সামনে পড়লেই শিশুরা তাতে ওঠার বায়না ধরছে। শুরু হয় চেঁচামেচি আর হৈ-হুল্লোড়। তাদের হৈ-হুল্লোড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। অন্যদিকে দোকানিরাও নানা রকম খেলনার পসরা সাজিয়ে বসেছে মেলায়।

মেলার মাঠের মধ্যে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হকাররা উড়াচ্ছে পাখি, রিমোট কন্ট্রোল হেলিকপ্টার, প্লাস্টিক ও এলুমিনিয়ামের তৈরি এ পাখি ও হেলিকপ্টার শিশুরা সহজে উড়াতে না পারলেও তা নিয়ে চলে তাদের কাড়াকাড়ি। কেউ আবার বাঁশিতে ফুঁ দিচ্ছেন। অনেকেই আবার বিভিন্ন প্যাভিলিয়নে ঢুকে সেখানে সাউন্ড বক্সে বাজতে থাকা গানের সঙ্গে শুরু করে দিচ্ছে নাচ। শিশুদের এ চিত্র দেখে আনন্দ পাচ্ছেন অভিভাবকরাও।

দৌলতপুর উপজেলা থেকে মেলায় এসেছেন মৌসুমী আক্তার। সঙ্গে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ক্লাস থ্রিতে, মেয়ে টুতে। নাগরদোলার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলের চোখে পড়ে সেটি। দেখেই ছেলে-মেয়ে দুজনই গোঁ ধরে সেখানে ওঠাতেই হবে তাদের। পরে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে সন্তানদের চাহিদা পূরণ করেন তিনি।নাগরদোলা যখন চক্কর দিচ্ছিল তখন এতে ওঠা সবাই একসঙ্গে চিৎকার করে আনন্দে মেতে ওঠে। আবার যখন থামানো হয় তখন কিছু একটা পাওয়ার আনন্দে খুশিতে ভরে ওঠে তাদের মন।পাশেই রয়েছে চার বগির ছোট ট্রেন। টিকিট কেটে অভিভাবকরা শিশুদের ট্রেনে তুলে দিতেই তাদের চোখ-মুখ আনন্দে ভরে ওঠে।এছাড়া রয়েছে নাইন-ডি অ্যানিমেশন। এর মধ্য দিয়ে কৃত্রিমভাবে আকাশ-পাতাল ঘুরে আসা যায়। মেলার গেটের বাম পাশেই রয়েছে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। এখানে অবশ্য শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি বড়রাও ভিড় জমান। এখানে বিভিন্ন বয়সী শিশু-কিশোরের কৌতূহল এবং ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।

ছোট্ট ঘোড়ার পিঠে চড়ে ৬ বছর বয়সী তানিশা অভিনয় করলো ঠিক একজন ঘোড় সওয়ারের মত। পা নাড়াচ্ছিল আর মুখে বলছিল টক টক টক টক। ঘোড়ায় চড়ে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করলে তানিশা জানায়, আমার আম্মু অনেক ভালো। আমাকে ঘোড়ায় চড়িয়েছে, ট্রেনে চড়িয়েছে। অনেক মজা এখানে। আমি প্রতিদিন আম্মুর সঙ্গে এখানে আসবো। শিশু-কিশোরদের বিনোদনের এ জায়গাটি গেট দিয়ে প্রবেশ করে ঝর্ণা পেরিয়ে ডান দিকে গেলেই দেখা যাবে। এখানে শিশুদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি রাইড। জায়গাটিতে ঢুকলেই শুনতে পাওয়া যায় শিশুদের চিৎকার ও হই-হুল্লোড়। সদর উপজেলার আউটপাড়া থেকে মেলায় ঘুরতে আসা ব্যবসায়ী সেন্টু মিয়া জানান, শিশুদের বেড়ানোর জন্য মানিকগঞ্জে খুব বেশি জায়গা নেই। তাছাড়া তেমন অবসর সময়ও পাই না। তাই মেলা উপলক্ষে বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। এখানে তারা অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে আনন্দ করছে। দেখে বেশ ভালো লাগছে।

মেলার আইন শৃঙ্খলা ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর রেনুকা আক্তার জানান, মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।