মুন্সিগঞ্জ

শ্রীনগরে ধর্ষণের শিকার কিশোরী ৬ মাসের অন্তঃসত্তা

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের ফুলকুচি গ্রামের মো. সোলায়মান মোল্লা (৩৫) নামে এক যুবকের ধর্ষণের শিকার দিনমজুর পিতার ১৪ বছরের কিশোরী কন্যা ৬ মাসের অন্তঃসত্তা হয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় গেলো ঈদুল ফিতরের ৭দিন পর স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুব শাহ্’র উপস্থিতিতে আপষ-মিমাংসার জন্য চুক্তিপত্রের নামে ষ্ট্যাম্পে ওই লম্পটের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। চুক্তিপত্র করার পর থেকে ধর্ষক সোলায়মান মোল্লা এলাকা ছাড়ে। শর্ত অনুসারে কোন সমাধান না পেয়ে ভুক্তভোগীর পিতা শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে প্রায় দেড়মাস যাবত মানসিক প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্তা কিশোরী অনিশ্চয়তার মধ্যে দরিদ্র পিতার সংসারে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।

আব্দুর রাজ্জাক, আজিজুলসহ এলাকাবাসী জানায়, ফুলকুচির মোল্লা বাড়িতে এক দাদির সাথে ঘুমানোর সুবাদে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই সোলায়মান ওই কিশোরীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এতে সে গর্ভবর্তী হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় মেম্বার মাহাবুব শাহ্’র উপস্থিতিতে অভিযুক্ত সোলায়মানের পরিবারের সদস্য ও আব্দুর রব নামে এক চাচা অন্যান্য আপষ মিমাংসার জন্য বৈঠকে বসে।

এ সময় কিশোরীর ভরনপুষণ ও গর্ভের বাচ্চার জন্য শর্তসাপেক্ষে ষ্ট্যাম্পে ধর্ষক সোলামানের স্বাক্ষর নেওয়া হয়। বিচার শালিসের পর থেকে সোলায়মান এলাকা থেকে উধাও হয়। প্রতিবেশীরা আরো জানায়, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে সোলায়মান দ্বিতীয় বিয়ে করে। সোলায়মান ২ সন্তানের জনক। অভিযুক্ত সোলায়মানের বাড়িতে গিয়েও ঘরের তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর পিতা বলেন, মেম্বার মাহাবুব শাহ্ শালিস আপষ মিমাংসার জন্য বসেছিলেন। ২ লাখ টাকা ও ১ শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ষ্ট্যাম্পে চুক্তির পর থেকেই সোলায়মান গাঢাকা দেয়। উপায় না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি।

আব্দুর রবের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোলায়মানের মা আমাকে ডাকলে ঢাকা থেকে গ্রামে আসি। আমার উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে ষ্ট্যাম্পে একটি চুক্তিপত্র হয়েছে এটা সত্য। স্থানীয় মেম্বার আমাকে চুক্তিতে সাক্ষী হতে বলেছিল কিন্তু আমি স্বাক্ষর দেই নাই।

কোলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাহাবুব শাহ্’র কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ৩০০ টাকার ষ্ট্যাম্পে একটা চুক্তিপত্র হয়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ ঘটনায় বিচার সালিশ কতটা যুক্তিযুক্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ধর্ষক সোলায়মানের বিচার হউক আমিও চাই।

শ্রীনগর থানার এসআই ও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা রিজভী আক্তার এ ব্যাপারে জানান, স্থানীয় মেম্বার ও ছেলে পক্ষের সমঝোতায় একটি চুক্তিপত্র হয়। যা পরবর্তীতে পালন না করায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন

Back to top button